মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় না হওয়ায় কিডনি বিক্রি করতে হাসপাতালে পৌঁছায় এক বালক

মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় না হওয়ায় কিডনি বিক্রি করতে হাসপাতালে পৌঁছায় এক বালক

  • বেসরকারি হাসপাতালের কর্মচারীরা রিমসের চিকিৎসকদের বিষয়টি জানান।
  • রিমসে চিকিৎসা ও সম্পূর্ণ খরচ বহন করার আশ্বাস।
  • টাকার অভাবে গয়ার বাসিন্দা দীপাংশুর মায়ের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়।

Ranchi : সারা বিশ্ব জুড়ে আগামী রবিবার উদযাপিত হবে মাতৃ দিবস। কিন্তু, মাতৃ দিবসের চারদিন আগে যে একজন নিষ্পাপ ছেলের আকুলতা দেখেছে এবং শুনেছে, সেও তার মায়ের প্রতি আকুল হয়ে উঠেছে। তার কারণ ওই বালকটি তার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করতে না পেরে তার কিডনি বিক্রি করার জন্য গ্রাহক খুঁজতে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে বেড়িয়েছে।

গয়ার বাসিন্দা দীপাংশু মাতৃ দিবস সম্পর্কে কিছুই জানে না, তবে তার হৃদয় কেবল তার মায়ের জন্যই স্পন্দিত হয়। অনেক সংগ্রামের পরও যখন সে মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করতে পারেনি, তখন সে রাঁচির একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে নিজের কিডনি বিক্রি করতে গ্রাহক খুঁজতে শুরু করে। যাতে সে কিডনি বিক্রি করে যা টাকা পাবে তাতে সে তার মা কে সুস্থ করে তুলতে পারে।

সে গ্রাহক খুঁজে পায়নি তবে পৃথিবীতে ঈশ্বররুপী ডাক্তারদের সাথে তার দেখা হয়। একজন ডাক্তার তার মা কে রাঁচিতে নিয়ে আসতে বলেন ও আশ্বাস দেন যে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। রিমসের নিউরো সার্জারি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট, ডাঃ বিকাশ এবং তার সহকর্মীরা দীপাংশুকে তার মা কে রিমসে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আস্তে বলেন এবং চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করার আশ্বাস দেন। দীপাংশু জানায় তার মায়ের পা ভেঙে গেছে কিন্তু তার চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত টাকা তার কাছে নেই।

দীপাংশু একটি প্রাইভেট হাসপাতালে পৌঁছে কিডনি বিক্রির জন্য গ্রাহকের খোঁজখবর শুরু করে। সে বিভিন্ন লোককে জিজ্ঞেস করে যে কিডনি কত টাকায় বিক্রি হবে? হাসপাতালের কর্মীরা বিষয়টি জানতে পেরে রিমসের চিকিৎসকদের জানান। সঙ্গে সঙ্গে ডক্টর বিকাশ ও তার সঙ্গীরা সেখানে পৌঁছে বালকটির সঙ্গে দেখা করেন। তাকে বুঝিয়ে বলেন, কিডনি বিক্রি অবৈধ। দীপাংশু বলতে থাকে চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার, তাই বিক্রি করতে হবে। চিকিৎসকরা চিকিৎসার আশ্বাস দিলে সে রাজি হয়।

দীপাংশু জানায়, ছোটবেলায় তার বাবা মারা যান। তার মা শ্রমিকের কাজ করে কোনোভাবে সংসার চালান। দীপাংশু তার মায়ের কষ্ট দেখতে না পেয়ে রাঁচিতে এসে একটি হোটেলে কাজ শুরু করে। এদিকে মায়ের পা ভেঙে গেছে বলে খবর পায় সে। সে যা টাকা রোজগার করে তা চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট নয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কিডনি বিক্রি করে টাকা জোগাড়ের কথা ভেবে বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছান সে। লোকেরা বলে যে সৌভাগ্যক্রমে ওই নিষ্পাপ বালকটি কোনো চোরাকারবারীদের শিকার হয়নি।

Spread the love