জামশেদপুরে পুলিশ লাইন হত্যাকান্ড
File photo
– শ্বাসরোধ করে চেহারায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তিনজনেরই একইভাবে হত্যা।
– মহিলা কনস্টেবলের কানও কেটে ফেলে দুষ্কৃতীরা, ধর্ষণের আশঙ্কা।
Jamshedpur : গোলমুরি পুলিশ লাইনে ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য জামশেদপুর পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। রাঁচির ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরীক্ষা করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে তিনজনকেই প্রায় একইভাবে খুন করা হয়েছে। তিনজনেরই জিভ বেরিয়ে রয়েছিল, ফলে পুলিশ সন্দেহ করছে তিনজনকেই প্রথমে শ্বাসরোধ করে না হয় বালিশ দিয়ে মুখ চেপে হত্যা করা হয়েছে। এরপর চেহারায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। মহিলা কনস্টেবল সবিতা রানীকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ও পরে ডান চোখের কাছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তারা। এরপর তার দুটি কানই পেছন থেকে অর্ধেক কেটে ফেলে। এ ছাড়া তার বুকে ও ডান হাতেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
সবিতার মা লাখিয়া মুর্মুকেও একইভাবে খুন করে হত্যাকারী। তারও জিভও বেরিয়েছিল এবং কপালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। ডান চোখেও একইভাবে আঘাত করা হয়েছে এবং দুই কানের কাছে কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া সবিতা রানীর মেয়ে গীতা হেমব্রমের ডান চোখের কাছে তিনটি আঘাতের চিহ্ন আছে, বাম পাশেও চোখের ওপরে আঘাত করা হয়েছে এবং তার মাথার পেছন দিকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা।
ধর্ষণের ঘটনা নিয়েও তদন্ত করছে পুলিশ
পুলিশ সবিতা ও তার মেয়ে গীতার ধর্ষণের সম্ভাবনাকেও এড়িয়ে যাচ্ছে না। পুলিশ এমন কিছু প্রমাণও পেয়েছে যা থেকে বোঝা যায় খুনের আগে বা পরে দুজনেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করতে পুলিশ পোস্টমর্টেম বিভাগকেও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর ধর্ষণের বিষয়ে সঠিক তথ্য জানা যাবে।
পুলিশি হেফাজতে এ পর্যন্ত সাতজন
ঘটনার পর থেকে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। যার মধ্যে সবিতার মৃত স্বামীর বড় ভাই ও ছোট ভাই, এসএসপির ড্রাইভার সমেত ডুমুরিয়ার দুজন কনস্টেবল, বিষ্টুপুর মলে কর্মরত এক সহকর্মী এবং আরও একজন রয়েছে। পুলিশ সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সবিতা ও তার মেয়ের মোবাইল ফোন ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে থাকা আর একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছে।
জ্ঞাতব্য যে বুধবার থেকে ডিউটিতে অনুপস্থিত থাকা মহিলা কনস্টেবল সবিতা রানীও তার মা ও মেয়ের মৃতদেহ তার কোয়ার্টারে পাওয়া যায়। তাদেরকে হত্যা করার পর মৃতদেহগুলিকে ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে ঘরটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেয় হত্যাকারীরা। দুই দিন পর ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে প্রতিবেশীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান।