জলে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’! স্থগিত সিন্ধু জল চুক্তি—
Special Report (Somnath Gope) : এবার পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে ঘিরে ফেলছে ভারত,পহেলগাঁও হামলার পর কড়া পদক্ষেপ কেন্দ্র সরকারের। 63 বছরের পুরনো সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করলো ভারত সরকার। জলকেই অস্ত্র বানিয়ে সন্ত্রাসের মদতদাতা পাকিস্তানকে কূটনৈতিক কড়া জবাব দিচ্ছে ভারত।
পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদতের অভিযোগ নতুন নয়, কিন্তু পহেলগাঁওয়ে হামলার নির্মমতা গোটা ভারতবাসীর মনে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার এর কৌশলগত বড় সিদ্ধান্ত, স্থগিত করা হল সিন্ধু জল চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে ভারত প্রায় ছ’দশক ধরে পাকিস্তানকে সিন্ধু ও তার উপনদীগুলির জল সরবরাহ করে আসছিল। আসলে এই জলই হলো পাকিস্তানের প্রাণভোমরা। দরিদ্র দেশটির 80% কৃষি, 25% জিডিপি এবং কোটি কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভর করে এই জল প্রবাহের উপর। কিন্তু
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারতের নতুন জল কূটনীতি জল যুদ্ধ, হাইড্রো ডিপ্লোম্যাসি থেকে হাইড্রো- উইপন। চীন যেমন ব্রহ্মপুত্রকে চাপ দেওয়ার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, তেমনই ভারত এখন সিন্ধুর জলকে পরিণত করছে “জল যুদ্ধের” কৌশলগত অস্ত্রে। ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলেও এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে যে এবার সন্ত্রাসের মদতদাতা রাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক নয়, এই সিদ্ধান্ত শুধু পাকিস্তানকে নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণকে নতুন করে বদলে দেবে।
1960 সালে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় এই চুক্তিতে সই করেন। কিন্তু পাকিস্তান এর পর শুকোবে, কারণ ভারত যদি এই জল চুক্তি পুরোপুরি বাতিল করে এবং সিন্ধুর জলের প্রবাহ বন্ধ করে দেয়, তবে পাকিস্তানে শুরু হবে জল সংকট, খাদ্য সংকট ও কৃষি বিপর্যয়। বিশেষ করে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কারণ এখানকার সেচ ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি সিন্ধুর উপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে পাকিস্তান অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। আইএমএফ ও চিনা ঋণের চাপে জর্জরিত রাষ্ট্রের পক্ষে জল সংকট “ডাবল পাঞ্চ” হিসেবে কাজ করবে। সন্ত্রাস ও সীমান্ত লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ভারতের জিরো টলারেন্স নীতি আবারও একবার প্রমাণ করল—যেখানে প্রয়োজন, সেখানে উদারতা বন্ধ করে কড়া বার্তা দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে দক্ষিণ এশিয়ার জল বণ্টন নীতি, কূটনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক বন্ধুত্ব এ।