পটমদা ইন্টার কলেজ থেকে পাঠশালা দর্শন যাত্রার উদ্বোধন করলেন অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি রাজীব রঞ্জন

পটমদা ইন্টার কলেজ থেকে পাঠশালা দর্শন যাত্রার উদ্বোধন করলেন অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি রাজীব রঞ্জন

শিক্ষা ছাড়া উন্নয়নের পরিকল্পনা সম্ভব নয় : রাজীব রঞ্জন

Patamda : কোলহানের প্রাক্তন ডিআইজি, রাজীব রঞ্জন সিং শনিবার পটমদাতে পৌঁছে লাউজোড়ার বিখ্যাত হাতিখেদা মন্দিরে প্রার্থনা করার পর তাঁর সামাজিক অভিযান ‘পাঠশালা দর্শন’ যাত্রার শুরু করেন। এরপর পটমদা ইন্টার কলেজ ক্যাম্পাসে পাঠশালা দর্শন যাত্রা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তরও দেন। প্রাক্তন ডিআইজি বলেন, যেকোনো সমাজ বা রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ছাড়া আমরা উন্নয়ন কল্পনা করতে পারি না এবং তার মাধ্যম হচ্ছে স্কুল-কলেজ এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আমরা সর্বদায় শিক্ষকদের সম্মান করি। পিতা-মাতার পর শিক্ষকই এমন এক ব্যাক্তিত্ত্ব যাঁকে আমরা পা ছুঁয়ে প্রণাম করি।
আমিও শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছি। ভ্রমণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণ প্রজন্মের সাথে মতবিনিময় করা। কারণ যুবসমাজেরই উপর পরিবার ও দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। দ্বাদশ শ্রেণীর পর উচ্চ শিক্ষার নানান রাস্তা খুলতে থাকে। প্রধানমন্ত্রী নতুন শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করেছেন। স্কিল ডেভেলপমেন্টকে বর্তমান সময়ের প্রধান প্রয়োজন হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, জেলা ও ব্লক পর্যায়ে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা উচিত। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন যেন তাদের মনে কোনো হীনমন্যতা তৈরি না হয় যে তারা সরকারি স্কুল বা কলেজে পড়াশুনা করে। শিক্ষকের মধ্যে কোনো হীনম্মন্যতা থাকা উচিত নয়। শিক্ষকদের সচেতন হতে হবে, শিশুদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

আজকের যুগে উন্নতির অনেক শাখা খুলে গেছে। গণযোগাযোগ, আইন, ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। তিনি সিভিল সার্ভিসে যোগদানের টিপস দেন। তিনি বলেন, শুধু চাকরিতেই মনোযোগী হলে হবে না, কৃষি ও অন্যান্য ব্যবসাতেও অন্যদের চেয়ে ভালো হয়ে উঠতে পারবে। আপনার প্রতিভা এবং ইচ্ছাশক্তি দিয়ে প্রথাগত চাষাবাদ বাদ দিয়ে বৈজ্ঞানিক চাষ করা যেতে পারে। স্টার্ট আপের অনেক সুযোগ এসেছে, যা ছোট জায়গাতেও শুরু করতে পারেন। তিনি বলেন যে তিনি কোলহানের 50 টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বা প্লাস টু স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবেন এবং সেখানে কী প্রয়োজন তার একটি প্রতিবেদন তৈরি করবেন এবং সরকারের কাছে জমা দেবেন। ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সমাজকে কিছু দেওয়ার জন্য এই প্রচার শুরু করেছেন বলে জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত বাগবেড়ার জেলা পার্ষদ ডাঃ কবিতা পারমার বলেন, আপনাদের মধ্যে ইচ্ছা শক্তি জাগ্রত করা প্রয়োজন। আপনি যখন লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যাবেন আপনি সফলতা পাবেন। বর্তমানে কোনো দূরত্ব নেই বা সুযোগ-সুবিধার অভাব নেই, আজকের দিনে আমেরিকাকেও প্রযুক্তির কারণে কাছে বলে মনে হচ্ছে।

প্রাক্তন পার্ষদ পিন্টু দত্ত বলেন, তোমরা ভালোভাবে লেখাপড়া কর যাতে মা-বাবার স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য পূরণ হয়। মোবাইলের সুবিধা এবং অসুবিধা উভয়ই রয়েছে, তাই এটিকে ভালভাবে ব্যবহার কর, এটি ভবিষ্যত গড়তে সহায়ক প্রমাণিত হবে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুনীল বরণ মাহাতো বলেন, সকল জীবের মধ্যে মানুষের জীবনই শ্রেষ্ঠ। তাই কিছু এমন কাজ কর যাতে সবার উপকার হয়, এটি সবার জন্য একটি ভাল সুযোগ।
পটমদা ডিগ্রি কলেজের সেক্রেটারি চন্দ্রশেখর টুডু বলেন যে এটি একটি শিক্ষা সম্পর্কিত প্রোগ্রাম। পাঠশালা দর্শন কার্যক্রম শুরু করার জন্য আমি অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও এই কলেজটি খুবই ভালো। এখানকার অধিকাংশ অভিভাবক কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত এবং সেখান থেকে যে আয় হয় তা থেকে তারা তাদের সন্তানদের শিক্ষা ব্যয় বহন করেন। গ্রামাঞ্চলে এটি একটিমাত্র কলেজ, এর মাধ্যমেই তারা উচ্চশিক্ষা লাভ করে। সঠিক দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় এখানকার ছাত্ররা প্লাস টু এর পর বিপথে চলে যায়। আজকের কর্মসূচি থেকে যদি কিছু সুফল পাওয়া যায়, তাহলে আমরা এটাকে অনেক বড় অর্জন হিসেবে বিবেচনা করব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পার্ষদ খগেন মাহাতো, অরুণ কুমার সিং, ডাঃ তরুণ কুমার মাহতো, গুরুপদ মাহাতো, বিশ্বনাথ মাহাতো, অরুণ কুমার প্রমুখ।

Spread the love